Recent Posts

LightBlog

Breaking

Monday, November 28, 2016

ড.ইউনুছ ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব তলব

গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরিবারের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের একক বা যৌথ নামে পরিচালিত এবং তাঁর সঙ্গে লেনদেন সংশ্লিষ্ট যেকোনো হিসাব বা যেকোনো ধরনের তথ্য থাকলে তা জানাতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার চিঠিটি বিভিন্ন ব্যাংকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ড. ইউনূস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজী ইউনূসের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকেও ইউনূস দম্পতির ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। মূলত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আয়কর ফাইলে থাকা তথ্যের সঙ্গে ব্যাংক হিসাবের তথ্যের মিল রয়েছে কি না, তা যাচাই করার জন্যই এনবিআর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ব্যাংকটিতে এমডির দায়িত্ব পালন করে আসা ড. ইউনূস ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পান। তবে অবসরের বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণে ২০১১ সালে সরকার তাঁকে এমডি পদ থেকে সরিয়ে দেয়। সরকারের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ইউনূস উচ্চ আদালতে গেলে হেরে যান সেখানেও। ওই সময় ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ইউনূসের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলাতে সরকারকে চাপ দেন। উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্যে দেখা যায়, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে অর্থ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সরকারের পক্ষ থেকে ড. ইউনূস ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফাইলপত্র নিয়ে খুব বেশি নাড়াচাড়া হয়নি। তবে দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের পক্ষ থেকে তিন দফায় পরিবারসহ তাঁর ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টিকে তাৎফর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।
গত ১৭ নভেম্বর এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) থেকে ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্টসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলবের চিঠি ইস্যু করা হয়। ওই চিঠি গতকাল বিভিন্ন ব্যাংকে পৌঁছেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আয়করসংক্রান্ত অনুসন্ধান, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা ও তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যাংকসহ যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ওই করদাতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের একক বা যৌথ নামে পরিচালিত এবং তাঁর সঙ্গে লেনদেন সংশ্লিষ্ট যেকোনো হিসাব বা অন্য যেকোনো ধরনের তথ্য সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্বের (আহরণ) স্বার্থে অতীব জরুরি বিবেচনা করে তাঁদের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
১৭ নভেম্বর সিআইসির ইস্যু করা আরেকটি চিঠি গত সপ্তাহে ব্যাংকগুলোতে পৌঁছেছে। তাতে গ্রামীণ ব্যাংকের আয়করসংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান, তদন্ত কার্যক্রমসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা ও তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যাংকসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংকের একক বা যৌথ নামে পরিচালিত এবং গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন সংশ্লিষ্ট যেকোনো হিসাব অথবা অন্য যেকোনো ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। মূলত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে ড. ইউনূসের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের তথ্য এ প্রতিবেদনেতে উঠে আসবে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।
এরপর গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে পাঠানো এক চিঠিতে ড. ইউনূস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজী ইউনূসের হিসাবের সব তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত বছরের ২৩ মার্চ ১৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ‘দান কর’ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ড. ইউনূসকে নোটিশ দিয়েছিল এনবিআর। ওই সময় সংশ্লিষ্ট কর কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল নোটিশে। ওই সময় ইউনূস বিদেশে থাকায় তাঁর প্রতিনিধি কর কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে ব্যাখ্যা দেন।

No comments:

Post a Comment